অক্ষর - শব্দের যে অংশটুকু একবারে উচ্চারিত হয় তাকে অক্ষর বলে। সাধারণ কথাবার্তায় অক্ষর বলতে বর্ণও বোঝানো হয়। এখানে বৃহৎ অর্থে মাতৃভাষা বোঝানো হয়েছে।
নির্ঝর - ঝরনা।
'এই অক্ষর যেন
নির্ঝর ছুটে চলে অবিরাম' - আমরা আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলি, লিখি। আমাদের পূর্বপুরুষেরাও তা-ই করতেন। তাই বলা হয়েছে মাতৃভাষা অবিরাম ছুটে চলেছে। মানে মাতৃভাষার মাধ্যমে আমরা নানা কাজ করে বর্তমান থেকে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছি।
'যেন কিছু তারা
দিচ্ছে পাহারা আকাশেতে
লিখে নাম' - এক সময়ে আমাদের এই দেশ পরাধীন ছিল। শাসকেরা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষাকে ব্যবহার করার সুযোগ থেকে আমাদের বঞ্চিত করেছিল। কিন্তু তখনকার সচেতন বাঙালিরা এ অধিকার আদায় করে নেয়। সে অধিকার আদায় করার জন্য অক্ষরগুলো যেন নিরবচ্ছিন্নভাবে অনুপ্রেরণার বিষয় হয়ে আছে।
'এই অক্ষরে মাকে
মনে পড়ে' - মায়ের কাছ থেকেই আমরা মাতৃভাষা প্রথম শিখি। তাই অক্ষর বা ভাষার দৃষ্টান্ত দেখলেই মাকে মনে পড়ে যায়।
উপমা - তুলনা।
অপরূপ - -খুব সুন্দর।
নূপুর - পায়ে পরার অলংকার।
মাতৃভাষার প্রতি শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা ও মমত্ববোধ জাগ্রত করা।
বাংলা অক্ষর বা বর্ণমালা বাঙালি জাতির অনন্য সম্পদ। এই বর্ণমালা বাঙালির প্রাণের সঙ্গে অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। বাংলা অক্ষর বাঙালির চিত্তকে আনন্দে ভরে দেয়। বাঙালিকে করে তোলে স্বপ্নমুখী। বাংলা অক্ষর বাঙালির চোখে দেখা দেয় মায়ের রূপ ধরে। কখনো তার চিত্তে বাজায় সুরের নূপুর।
বাংলা অক্ষর বাঙালির মিলিত সত্তার শ্রেষ্ঠতম উৎস। আমাদের অক্ষরসমূহ আপন-পর সকলকে কাছে টানে, দূর করে দেয় সব বিভেদ। বাংলা অক্ষর বাঙালির বুকে সঞ্চার করে অবারিত আশা। আলোচ্য কবিতাটিতে বাংলা অক্ষর তথা বর্ণমালার প্রতি কবির অবারিত ভালোবাসা ও গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে।
কবি মহাদেব সাহা ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে সিরাজগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। মহাদেব সাহার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো: 'এই গৃহ এই সন্ন্যাস', 'অস্তমিত কালের গৌরব', 'টাপুর টুপুর মেঘের দুপুর', 'ছবি আঁকা পাখির পাখা', 'সরষে ফুলের নদী' ইত্যাদি।
ক. তোমার পূর্বে পড়া বাংলা ভাষাবিষয়ক একটি গল্প বা কবিতা অবলম্বনে একটি রচনা তৈরি কর (একক কাজ)।
খ. ভাষা-আন্দোলন নিয়ে রচিত কবিতাসমূহ সংগ্রহ করে একটি দেয়ালিকা প্রকাশ কর (দলীয় কাজ)।
১. এই অক্ষরে কবিতায় কাকে মনে পড়ার কথা বলা হয়েছে?
ক. প্রিয়জনকে
খ. মাকে
গ. দেশকে
ঘ. ভাষাকে
২. 'এই অক্ষর যেন নির্ঝর / ছুটে চলে অবিরাম' চরণদ্বয় দ্বারা কবি বুঝিয়েছেন-
i. মাতৃভাষায় আমরা অতীত ইতিহাস জানি
ii. বর্তমানকে আমরা মাতৃভাষায় বুঝতে পারি
iii. আমরা ভবিষ্যতের স্বপ্নও বুনি মাতৃভাষায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i
খ. ii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
কবিতাংশ পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
(১) বাংলার গল্প বাংলার গীত শুনিলে এ চিত্ত সদা বিমোহিত
(২) সুখে দুঃখে তারা এসে মোর পাশে তোষে সদা মোরে মধুর সম্ভাষে
৩. ১ নং কবিতাংশে 'এই অক্ষরে' কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে?
ক. ভাষাপ্রীতি
খ. প্রকৃতিপ্রীতি
গ. মর্ত্যপ্রীতি
ঘ. স্বদেশপ্রীতি
৪. ২ নং কবিতাংশে বক্তব্য নিচের কোন চরণে প্রকাশ পেয়েছে?
i. এই অক্ষরে / ডাকনাম ধরে / ডাক দেয় বুঝি কেউ
ii. এই অক্ষর / আত্মীয়-পর/ সকলেরে কাছে টানে
iii. এই অক্ষরে / মাকে মনে পড়ে / মন হয়ে যায় নদী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. iও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
১. আর তাই তো কখনো আমি পড়তে দিই নি ধুলো, এই কালো
এ-কারে আ-কারে
তারা যেন ক্ষেতের সোনালি পাকা ধান, থোকা থোকা
পড়ে থাকা জুঁই।
তোমার জন্য জয় করেছি একটি যুদ্ধ
একটি দেশের স্বাধীনতা।
ক. কঠিন পাথরে কী লেখা হয়?
খ. 'এই অক্ষরে মাকে মনে পড়ে' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের 'তারা' 'এই অক্ষরে' কবিতার কিসের সাথে তুলনীয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "উদ্দীপকের শেষ দুটি চরণে 'এই অক্ষরে' কবিতার সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবার্থ ফুটে উঠেছে।" উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
common.read_more